শবে মেরাজের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়?

শবে মেরাজের নামাজ একটি নফল ইবাদত, যা রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে পালন করা হয়। এই নামাজের পদ্ধতি ও সূরা নির্বাচন সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা থাকলেও সাধারণভাবে নিম্নোক্তভাবে এটি আদায় করার কথা উল্লেখ করা হয়:

শবে মেরাজের নামাজ পড়ার নিয়ম

রজব মাসে আইয়ামে বীজের রোজা ছাড়া অন্য কোনো রোজার কথা নবী করীম (স.) বলেননি। পাশাপাশি তাহাজ্জুদ নামাজ ছাড়া আর কোনো নফল নামাজের কথাও বলেননি। হাদিস শরীফে শবেবরাত ও শবে মেরাজের নামাজ বলে কোনো নামাজের কথা আসেনি।

রাসূলুল্লাহ (স.) শুধু বিশেষ কোনো রাত্রিতে নামাজ পড়তেন না, এবং বিশেষ কোন রাত্রিতে তা পড়ার জন্য তিনি কাউকে বলেননি। তবে রামাদান মাসে কিয়ামুললাইলের কথা এসেছে দুইভাবে।

প্রথমত সাধারণভাবে রামাদানে কিয়ামুল লাইলের কথা এসেছে। দ্বিতীয়ত লাইলাতুল কাদরে কিয়ামুল লাইলের কথা এসেছে।

কিন্তু অন্য কোনো বিশেষ রাত্রির বিশেষ কিয়ামের কথা কোনো হাদিসে আসেনি। এমনকি কদরের রাতে যে কিয়ামের কথা বলা হয়েছে. তার নামও কিন্তু কদরের রাতের নামাজ নয়। আর শবে মেরাজ ও শবে বরাতের নামাজের কথা তো বলাই বাহুল্য।

নামাজের পদ্ধতি:

এই নামাজ ১২ রাকাত (কোনো বর্ণনায় ৮ রাকাতও উল্লেখ আছে)। প্রতি ২ রাকাতে সালাম ফেরানো হয়। প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর নিম্নোক্ত সূরা বা আয়াতগুলো পড়ার কথা বলা হয়েছে:

  1. প্রথম রাকাত: সূরা ফাতিহার পর সূরা আল-কাফিরুন (সূরা ১০৯)
  2. দ্বিতীয় রাকাত: সূরা ফাতিহার পর সূরা আল-ইখলাস (সূরা ১১২)
  3. তৃতীয় রাকাত: সূরা ফাতিহার পর সূরা আল-ফালাক (সূরা ১১৩)
  4. চতুর্থ রাকাত: সূরা ফাতিহার পর সূরা আন-নাস (সূরা ১১৪)
  5. পঞ্চম রাকাত: সূরা ফাতিহার পর সূরা আল-কাদর (সূরা ৯৭)
  6. ষষ্ঠ রাকাত: সূরা ফাতিহার পর আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ২৫৫)

বাকি রাকাতগুলিতে সূরা ফাতিহার পর যেকোনো ছোট সূরা বা ইচ্ছানুযায়ী কুরআন তিলাওয়াত করা যায়।

গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা:

  • এই নামাজের নির্দিষ্ট কোনো হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি নেই, বরং এটি ঐতিহ্যগতভাবে পালিত হয়। তাই এটি সম্পূর্ণ নফল হিসেবে আদায় করুন এবং অতিরিক্ত আমলের নিয়তে সূরা নির্বাচন করুন।
  • নামাজ শেষে দোয়া ও ইস্তিগফার করা এবং নবী করিম (সা.)-এর উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা উত্তম।
  • যেকোনো সন্দেহ বা জটিলতার ক্ষেত্রে স্থানীয় আলেম বা নির্ভরযোগ্য ইসলামিক সূত্র অনুসরণ করুন।

মনে রাখবেন:

নিয়ত ও ইখলাসের সাথে নামাজ আদায় করাই মূল উদ্দেশ্য। সূরা বা আয়াত নির্বাচনে ভুল হলে নামাজ শুদ্ধ হবে, ইনশাআল্লাহ।

FacebookX
kamruz
kamruz

সময় পেলেই মানেকীতে সাম্প্রতিক ও সাধারণ বিষয়ে লেখা লিখি করি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *