বাংলাদেশের সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে কোটা সংস্কার আন্দোলন। ২০২৪ সালে এই আন্দোলন তীব্রতর হয়ে ওঠে, যার ফলে সারা দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখা দেয়।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট:
- দীর্ঘদিন ধরে চলমান মেধা ও যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে নিয়োগ না বরং, জাতিগত ও আঞ্চলিক ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রদানের কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ।
- ১০ জুলাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হয়ে শাহবাগে গিয়ে অবরোধ শুরু করে।
- ১১ জুলাই: হাইকোর্ট কোটা বাতিল করে রায় দেয়।
- ১২ জুলাই: সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।
- ১৪ জুলাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে।
- ১৫ জুলাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয় এবং বেশ কয়েকজন নিহত হয়।
- ১৬ জুলাই: আন্দোলনকারীরা দেশব্যাপী হরতাল পালন করে।
প্রধান দাবি:
- যোগ্যতার ভিত্তিতে: সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া।
- কোটা ব্যবস্থা সংস্কার: বর্তমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কার ও যুক্তিসঙ্গত করা।
- সকলের জন্য সমান সুযোগ: সকল শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা:
- আন্দোলনের সূচনা: ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে।
- ব্যাপক সমর্থন: দ্রুতই সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে যোগদান করে।
- হিংসাত্মক ঘটনা: কিছু স্থানে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয় এবং হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
- আন্তর্জাতিক মনোযোগ: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই আন্দোলন নিয়ে খবর প্রকাশ করে।
- সরকারের পদক্ষেপ: সরকার আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনা শুরু করে এবং কিছু সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়।
বর্তমান অবস্থা:
আন্দোলন এখনও চলমান রয়েছে এবং কোন স্থায়ী সমাধান এখনও পাওয়া যায়নি। সরকার ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে এবং আগামীতে কী ঘটবে তা এখনও অনিশ্চিত।
আন্দোলনের প্রভাব:
এই আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়েছে এবং সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জোরালো হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
- ২০২৪ সালের ১০ই জুলাই হাইকোর্ট কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেয়।
- তবে, এক সপ্তাহ পর সরকার এই রায় স্থগিত করে।
- আন্দোলন চলাকালীন ৬ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।