কোটা আন্দোলন হলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের একটি চলমান আন্দোলন যারা সরকারি চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধায় কোটা ব্যবস্থার সংস্কার বা বিলুপ্তির দাবি করছে।
কোটা ব্যবস্থা:
বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন সরকারি চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, মেডিকেল কলেজে ভর্তি ইত্যাদিতে, মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান, জাতীয় সংখ্যালঘু, প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা, নারী, প্রতিবন্ধী ইত্যাদির জন্য নির্ধারিত শতাংশ আসন রয়েছে। এই ব্যবস্থাকেই কোটা বলা হয়।
আন্দোলনকারীদের দাবি:
কোটা আন্দোলনকারীরা মনে করেন যে বর্তমান কোটা ব্যবস্থা অযৌক্তিক এবং অন্যায়। তাদের দাবি হলো:
- যোগ্যতার ভিত্তিতে মেধাবীদের সুযোগ প্রদান: তারা মনে করেন কোটা ব্যবস্থার কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
- কোটা ব্যবস্থার পরিমাণ হ্রাস: তারা মনে করেন বর্তমানে কোটার পরিমাণ অনেক বেশি, যা যোগ্যতার ভারসাম্য নষ্ট করছে।
- কোটা ব্যবস্থার ন্যায্য বন্টন: তারা মনে করেন কোটা সুবিধা সকল জনগোষ্ঠীর মধ্যে ন্যায্যভাবে বন্টন করা উচিত।
- পরিবর্তে বিকল্প সুযোগ প্রদান: তারা মনে করেন কোটা ব্যবস্থার পরিবর্তে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য বিকল্প সুযোগ তৈরি করা উচিত।
আন্দোলনের ইতিহাস:
কোটা আন্দোলন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে চলে এসেছে।
- ১৯৮০-এর দশক: মুক্তিযুদ্ধের সন্তানদের জন্য কোটা প্রবর্তনের বিরুদ্ধে প্রথম বড় আন্দোলন শুরু হয়।
- ২০০৯ সাল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে।
- ২০১৮ সাল: সরকারি চাকরিতে কোটা বৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদে সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন ছিলো বর্তমান কোটা আন্দোলনের সূচনা।
- ২০২৩ সাল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় কোটা প্রবর্তনের বিরুদ্ধে আবারও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন এখনও চলমান।
- ২০২৪ সাল: ২০২৪ সালে এই আন্দোলন তীব্রতর হয়ে ওঠে, যার ফলে সারা দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখা দেয়।