প্যানিক অ্যাটাক কি?

প্যানিক অ্যাটাক হলো একটি মানসিক অবস্থা যেখানে হঠাৎ করে তীব্র ভীতি বা আতঙ্ক অনুভূত হয়। এটি সাধারণত কিছু সময়ের জন্য স্থায়ী হয় এবং শারীরিক ও মানসিক উভয় উপসর্গ দেখা দেয়। প্যানিক অ্যাটাক কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই হতে পারে বা কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবেও হতে পারে।

প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণ:

  1. শারীরিক লক্ষণ:
    • হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া (পালপিটেশন)
    • ঘাম হওয়া
    • শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
    • বুকের ব্যথা বা অস্বস্তি
    • মাথা ঘোরা বা দুর্বল লাগা
    • শরীর ঠাণ্ডা বা গরম অনুভব করা
    • হাত-পা কাঁপা
    • পেটের অস্বস্তি বা বমি ভাব
  2. মানসিক লক্ষণ:
    • মৃত্যুভয়
    • নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয়
    • বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব (ডিপারসোনালাইজেশন বা ডিরিয়ালাইজেশন)
    • আতঙ্ক বা অনিরাপদ অনুভূতি

প্যানিক অ্যাটাকের কারণ:

  • স্ট্রেস: দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ বা উদ্বেগ।
  • আঘাতমূলক ঘটনা: দুর্ঘটনা, প্রিয়জন হারানো, বা ট্রমা।
  • মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: প্যানিক ডিসঅর্ডার, জেনারালাইজড অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD)।
  • জেনেটিক ফ্যাক্টর: পরিবারে এই সমস্যা থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
  • শারীরিক কারণ: থাইরয়েড সমস্যা, হৃদরোগ, বা কোকেন ও অ্যালকোহল ব্যবহারের মতো বিষয়।

করণীয়:

  • শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ: গভীর শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন।
  • শরীর শিথিল করুন: ধীরে ধীরে হাত-পা শিথিল করার চেষ্টা করুন।
  • পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা: নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিন যে এটি সাময়িক।
  • মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য: থেরাপি, বিশেষ করে কগনিটিভ বিহেভিয়োরাল থেরাপি (CBT), খুবই কার্যকর।
  • প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ: চিকিৎসকের পরামর্শে এন্টি-অ্যানজাইটি বা এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ নেওয়া যেতে পারে।

প্যানিক অ্যাটাক নিয়মিত হলে এটি প্যানিক ডিসঅর্ডার-এর লক্ষণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

FacebookX
Najrin Akter
Najrin Akter

আমি নাজরিন আক্তার, সাধারণ ও অজানা বিষয়ে জানার অগ্রহী ! এখানে আমি এই গুলা নিয়ে নিয়মিত লেখা লেখি করতেছি ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *