প্যানিক অ্যাটাক হলো একটি মানসিক অবস্থা যেখানে হঠাৎ করে তীব্র ভীতি বা আতঙ্ক অনুভূত হয়। এটি সাধারণত কিছু সময়ের জন্য স্থায়ী হয় এবং শারীরিক ও মানসিক উভয় উপসর্গ দেখা দেয়। প্যানিক অ্যাটাক কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই হতে পারে বা কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবেও হতে পারে।
প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণ:
- শারীরিক লক্ষণ:
- হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া (পালপিটেশন)
- ঘাম হওয়া
- শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
- বুকের ব্যথা বা অস্বস্তি
- মাথা ঘোরা বা দুর্বল লাগা
- শরীর ঠাণ্ডা বা গরম অনুভব করা
- হাত-পা কাঁপা
- পেটের অস্বস্তি বা বমি ভাব
- মানসিক লক্ষণ:
- মৃত্যুভয়
- নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয়
- বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব (ডিপারসোনালাইজেশন বা ডিরিয়ালাইজেশন)
- আতঙ্ক বা অনিরাপদ অনুভূতি
প্যানিক অ্যাটাকের কারণ:
- স্ট্রেস: দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ বা উদ্বেগ।
- আঘাতমূলক ঘটনা: দুর্ঘটনা, প্রিয়জন হারানো, বা ট্রমা।
- মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: প্যানিক ডিসঅর্ডার, জেনারালাইজড অ্যানজাইটি ডিসঅর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD)।
- জেনেটিক ফ্যাক্টর: পরিবারে এই সমস্যা থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
- শারীরিক কারণ: থাইরয়েড সমস্যা, হৃদরোগ, বা কোকেন ও অ্যালকোহল ব্যবহারের মতো বিষয়।
করণীয়:
- শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ: গভীর শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন।
- শরীর শিথিল করুন: ধীরে ধীরে হাত-পা শিথিল করার চেষ্টা করুন।
- পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা: নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিন যে এটি সাময়িক।
- মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য: থেরাপি, বিশেষ করে কগনিটিভ বিহেভিয়োরাল থেরাপি (CBT), খুবই কার্যকর।
- প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ: চিকিৎসকের পরামর্শে এন্টি-অ্যানজাইটি বা এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ নেওয়া যেতে পারে।
প্যানিক অ্যাটাক নিয়মিত হলে এটি প্যানিক ডিসঅর্ডার-এর লক্ষণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।