“কপর্দকহীন” শব্দের অর্থ হল “নিঃস্ব”। “কপর্দক” শব্দের অর্থ হল “কড়ি”। কপর্দকহীন শব্দের অর্থ হল এমন ব্যক্তি যার কাছে কড়ি অর্থাৎ অর্থ-সম্পদ কিছুই নেই।
কপর্দকহীন শব্দটি বাংলা সাহিত্যে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে কপর্দকহীন শব্দটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী তাঁর “চৈতন্যচরিতামৃত” গ্রন্থে কপর্দকহীন শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তিনি লিখেছেন,
“কপর্দকহীন ভিক্ষুক হইয়া,
সন্ন্যাসী সেজেছে,
ভক্তগণকে শান্তি দিতে,
ভগবানচন্দ্র।”
এখানে মুকুন্দরাম চক্রবর্তী কপর্দকহীন শব্দটি ব্যবহার করে ভগবান চন্দ্রকে একজন নিঃস্ব ভিক্ষুক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বাংলা সাহিত্যের অন্যান্য কবিও কপর্দকহীন শব্দটি ব্যবহার করেছেন। কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী তাঁর “বিহারী-বিলাস” গ্রন্থে লিখেছেন,
“কপর্দকহীন পথিক যেন,
বৃষ্টিতে ভিজিয়াছে,
মনেতে তার কত দুঃখ,
চোখেতে তার কত জল।”
এখানে বিহারীলাল চক্রবর্তী কপর্দকহীন শব্দটি ব্যবহার করে একজন নিঃস্ব পথিককে বর্ণনা করেছেন।
বর্তমান বাংলা ভাষায় কপর্দকহীন শব্দটি এখনও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কপর্দকহীন শব্দটি সাধারণত নিঃস্ব ব্যক্তিদের বর্ণনা করতে ব্যবহার করা হয়।