লিভ টুগেদার (Live Together) শব্দটি সাধারণত এমন একটি জীবনযাপনের ধরন বোঝায়, যেখানে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি, যারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ নয়, একসঙ্গে একই বাড়িতে বসবাস করেন এবং সাধারণত একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বা দাম্পত্য জীবনযাপন করেন। এটি পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বেশ প্রচলিত হলেও অনেক সংস্কৃতি ও সমাজে এটি একটি বিতর্কিত বিষয়।
লিভ টুগেদারের মূল বৈশিষ্ট্য:
- বিবাহ ছাড়া সম্পর্ক: লিভ টুগেদার করা ব্যক্তিরা সাধারণত কোনো আইনি বা ধর্মীয় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন না।
- দাম্পত্য সম্পর্ক: একসঙ্গে থাকার পাশাপাশি তারা একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ভাগ করে নেন, যা প্রায়ই বিবাহিত দম্পতিদের মতো।
- পারস্পরিক সমঝোতা: এটি সম্পূর্ণরূপে পারস্পরিক সমঝোতার ওপর নির্ভরশীল। উভয়পক্ষ সম্মতি দিলেই তারা একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
- দায়িত্ববোধ: যদিও তারা বিবাহিত নন, তাদের সম্পর্কের দায়িত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতার উপর ভিত্তি করে জীবনযাপন করতে হয়।
লিভ টুগেদার এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি:
- পশ্চিমা সমাজ: পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে এটি একটি সাধারণ ব্যাপার এবং অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য।
- এশীয় ও মুসলিম সমাজ: এশিয়ান, বিশেষত মুসলিম ও ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোতে লিভ টুগেদার এখনও সামাজিকভাবে বিতর্কিত এবং ধর্মীয় দৃষ্টিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত।
- ধর্মীয় প্রভাব: ইসলামে ও অন্যান্য রক্ষণশীল ধর্মে লিভ টুগেদার সাধারণত হারাম বলে বিবেচিত, কারণ এটি বিবাহের বাইরে শারীরিক সম্পর্ককে অনুমোদন দেয়।
লিভ টুগেদার করার সাধারণ কারণ:
- বিবাহের আগে একজন আরেকজনকে ভালোভাবে জানা।
- আর্থিক সুবিধা, যেমন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ভাগাভাগি করা।
- সম্পর্কের উপর সামাজিক বা আইনি চাপ ছাড়া জীবনযাপন।
- জীবনযাত্রার একটি স্বাধীন ধারা বজায় রাখা।
ধর্মীয় ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ:
- ইসলাম: ইসলামে লিভ টুগেদার হারাম, কারণ এটি বিবাহের বাইরে সম্পর্কের অনুমোদন দেয়। বিবাহবন্ধনকে একটি পবিত্র এবং আল্লাহর নিকট গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- হিন্দু ও অন্যান্য ধর্ম: ভারতীয় উপমহাদেশে রক্ষণশীল হিন্দু সমাজেও এটি সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
- নৈতিক বিতর্ক: অনেকেই মনে করেন, এটি পরিবার ব্যবস্থাকে দুর্বল করে এবং সামাজিক মূল্যবোধের ক্ষতি করতে পারে।