মার্শাল ল’ বা সামরিক আইন হল একটি বিশেষ ধরনের আইন যা সাধারণত একটি দেশের নিয়মিত আইন ও সংবিধান স্থগিত করে সামরিক কর্তৃপক্ষকে সর্বময় ক্ষমতা প্রদান করে। এই আইনের অধীনে সাধারণ আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার পরিবর্তে সামরিক বাহিনী আইন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করে এবং সাধারণ আদালতের পরিবর্তে সামরিক আদালত (মার্শাল কোর্ট) প্রতিষ্ঠিত হয়।
মার্শাল ল’ বা সামরিক আইন আরোপের কারণ:
- জরুরি পরিস্থিতি: কোনো যুদ্ধ, বিদ্রোহ, বা বড় ধরনের জনদাঙ্গা বা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হলে।
- সরকারি নিয়ন্ত্রণ হারানো: কোনো অঞ্চলে বা সারা দেশে সরকার নিয়ন্ত্রণ হারালে এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে না পারলে।
- সরকারি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন: সরকারের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার বা বজায় রাখার জন্য সাময়িকভাবে সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
মার্শাল ল’ বা সামরিক আইন আরোপের প্রভাব:
- আইন-আদালতের সীমাবদ্ধতা: সাধারণ নাগরিক আইন ও আদালতগুলো স্থগিত থাকে এবং সামরিক আদালত দ্বারা বিচার করা হয়।
- মৌলিক অধিকার স্থগিত: সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার যেমন বাকস্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, এবং চলাচলের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়।
- সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ: সেনাবাহিনী দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, যেমন টেলিভিশন কেন্দ্র, বিমানবন্দর, এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে নেয়।
- গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্থগিতকরণ: গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কার্যক্রম স্থগিত থাকে বা সীমিত হয়ে যায়।
মার্শাল ল’ সাধারণত একটি সাময়িক ব্যবস্থা, যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উঠিয়ে নেয়া হয় এবং সাধারণ আইন ও সংবিধান পুনর্বহাল করা হয়।