পলিগ্রাফ টেস্ট বা লাই ডিটেকটর টেস্ট হল এমন একটি পরীক্ষা যেখানে একজন ব্যক্তির শারীরিক প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে তার বক্তব্যের সত্যতা নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয়। এই পরীক্ষায় ব্যক্তির হৃদস্পন্দন, শ্বাসপ্রশ্বাসের হার, রক্তচাপ এবং ত্বকের পরিবর্তন ইত্যাদি পরিমাপ করা হয়। ধারণা করা হয় যে, যখন কেউ মিথ্যা বলে তখন তার শরীরে কিছু শারীরিক পরিবর্তন হয়, যা এই পরীক্ষায় ধরা পড়ে।
কীভাবে পলিগ্রাফ টেস্ট করা হয়?
- সেন্সর সংযোজন: পরীক্ষার সময়, ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন সেন্সর সংযুক্ত করা হয়। এই সেন্সরগুলি হৃদস্পন্দন, শ্বাসপ্রশ্বাসের হার, রক্তচাপ এবং ত্বকের পরিবর্তন পরিমাপ করে।
- প্রশ্নোত্তর: পরীক্ষাকারী বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে। কিছু প্রশ্ন সাধারণ হতে পারে, আবার কিছু প্রশ্ন সরাসরি ঘটনার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
- ডাটা বিশ্লেষণ: পরীক্ষার সময় সংগ্রহ করা তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ করে পরীক্ষাকারীরা একটি ফলাফল প্রকাশ করে।
পলিগ্রাফ টেস্ট কতটা নির্ভরযোগ্য?
পলিগ্রাফ টেস্টের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, এই পরীক্ষার ফলাফল সবসময় সঠিক হয় না। কারণ, একজন অপরাধী হতে পারে, কিন্তু পরীক্ষায় তার শারীরিক প্রতিক্রিয়া এমন হতে পারে যে, তাকে নির্দোষ বলে মনে হবে। আবার, একজন নির্দোষ ব্যক্তিও খুব বেশি চাপের কারণে মিথ্যা বলে ফেলতে পারে।
পলিগ্রাফ টেস্টের কিছু সীমাবদ্ধতা:
- মানসিক অবস্থা: মানসিক অবস্থা, ওষুধ সেবন, শারীরিক অসুস্থতা ইত্যাদি পলিগ্রাফ টেস্টের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।
- প্রশ্নের গঠন: প্রশ্নগুলি কীভাবে করা হয়, তা ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।
- পরীক্ষাকারীর দক্ষতা: পরীক্ষাকারীর দক্ষতাও ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে।
সারসংক্ষেপ: পলিগ্রাফ টেস্ট হল একটি জটিল বিষয়। এই পরীক্ষার ফলাফলকে একমাত্র প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। অন্যান্য প্রমাণের সাথে মিলিয়ে এই ফলাফলকে বিবেচনা করা উচিত।