bios এর কাজ কি?

BIOS এর কাজ বা কার্যাবলী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি কম্পিউটারের মস্তিষ্কের মতো কাজ করে। BIOS এর পূর্ণরূপ Basic Input/Output System। এটি মাদারবোর্ডে স্থাপিত একটি ফার্মওয়্যার যা কম্পিউটার চালু হওয়ার সাথে সাথে প্রথমে কার্যকর হয় এবং বিভিন্ন হার্ডওয়্যার উপাদানের সাথে অপারেটিং সিস্টেমের সংযোগ স্থাপন করে। নিচে BIOS-এর প্রধান কাজগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল:

BIOS-এর প্রধান কাজসমূহ:

Power-On Self Test (POST):

  • বর্ণনা: কম্পিউটার চালু হওয়ার পর BIOS প্রথমে POST প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
  • উদ্দেশ্য: এটি নিশ্চিত করে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার উপাদান যেমন CPU, মেমোরি (RAM), স্টোরেজ ডিভাইস (হার্ড ড্রাইভ, SSD), কীবোর্ড, মাউস ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা।
  • ফলাফল: যদি কোনো হার্ডওয়্যার সমস্যা থাকে, তাহলে BIOS বীপ সিগন্যাল বা ত্রুটি বার্তা প্রদর্শন করে ব্যবহারকারীকে অবহিত করে।
  1. বুট সিকোয়েন্স নির্ধারণ (Boot Sequence):
  • বর্ণনা: POST সম্পন্ন হওয়ার পরে, BIOS নির্ধারণ করে কোন ডিভাইস থেকে অপারেটিং সিস্টেম লোড হবে।
  • উদ্দেশ্য: বুট ডিভাইসের ক্রম নির্ধারণ করা, যেমন হার্ড ড্রাইভ, SSD, ইউএসবি ড্রাইভ, অপটিক্যাল ড্রাইভ (CD/DVD) ইত্যাদি।
  • ফলাফল: BIOS বুটলোডারকে নিয়ন্ত্রণ করে, যা অপারেটিং সিস্টেমকে মেমোরিতে লোড করে।

হার্ডওয়্যার ইনিশিয়ালাইজেশন এবং কনফিগারেশন:

  • বর্ণনা: BIOS বিভিন্ন হার্ডওয়্যার উপাদানের ইনিশিয়ালাইজেশন এবং কনফিগারেশন করে।
  • উদ্দেশ্য: হার্ডওয়্যার উপাদানগুলির সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করা এবং সেগুলিকে অপারেটিং সিস্টেমের সাথে সমন্বয় করা।
  • ফলাফল: যেমন, ডিসপ্লে কার্ড, নেটওয়ার্ক কার্ড, এবং অন্যান্য পেরিফেরাল ডিভাইসগুলির সঠিক কার্যকারিতা।

ফার্মওয়্যার আপডেট:

  • বর্ণনা: BIOS ফার্মওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে নতুন হার্ডওয়্যার সমর্থন এবং বাগ ফিক্স সরবরাহ করে।
  • উদ্দেশ্য: সিস্টেমের স্থায়িত্ব এবং কর্মক্ষমতা উন্নত করা।
  • ফলাফল: কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখা।

সিস্টেম সেটিংস ম্যানেজমেন্ট:

  • বর্ণনা: BIOS ব্যবহারকারীদের সিস্টেম সেটিংস কনফিগার করার সুযোগ দেয়।
  • উদ্দেশ্য: যেমন, বুট অর্ডার পরিবর্তন, সিস্টেমের সময় ও তারিখ নির্ধারণ, হার্ডওয়্যার প্যারামিটার সেট করা ইত্যাদি।
  • ফলাফল: ব্যবহারকারী প্রয়োজন অনুযায়ী সিস্টেমের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

  • বর্ণনা: BIOS বিভিন্ন নিরাপত্তা ফিচার প্রদান করে।
  • উদ্দেশ্য: যেমন, BIOS পাসওয়ার্ড সেট করা, Secure Boot সক্রিয় করা ইত্যাদি।
  • ফলাফল: অজানা বা অননুমোদিত সফটওয়্যার অপারেটিং সিস্টেমের বুটিং প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা থেকে সিস্টেমকে রক্ষা করে।

BIOS-এর বিকল্প: UEFI

আধুনিক কম্পিউটারে BIOS-এর পরিবর্তে UEFI (Unified Extensible Firmware Interface) ব্যবহৃত হচ্ছে। UEFI আরও উন্নত ফিচার এবং নিরাপত্তা প্রদান করে, যেমন:

  • গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI): BIOS-এর তুলনায় আরও ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস।
  • বড় স্টোরেজ সমর্থন: GPT (GUID Partition Table) ব্যবহার করে বড় স্টোরেজ ডিভাইস সমর্থন করে।
  • Secure Boot: অপ্রত্যাশিত বা ক্ষতিকারক সফটওয়্যার লোড হওয়া থেকে সিস্টেমকে রক্ষা করে।
  • ফাস্ট বুটিং: কম সময়ের মধ্যে সিস্টেম বুটিং সক্ষম করে।

সারাংশ:

BIOS (Basic Input/Output System) কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে একটি সংযোগস্থাপন করে, যা সিস্টেমের স্টার্টআপ এবং হার্ডওয়্যার কনফিগারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কম্পিউটার চালু হওয়ার প্রথম ধাপ থেকে অপারেটিং সিস্টেম লোড হওয়া পর্যন্ত সিস্টেমের কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় করে। আধুনিক প্রযুক্তিতে, BIOS-এর পরিবর্তে UEFI ব্যবহৃত হলেও, এর মূল কাজ এবং গুরুত্ব অপরিবর্তিত রয়েছে।

FacebookX
Kamrul Islam
Kamrul Islam

সময় পেলেই মানেকীতে সাম্প্রতিক ও সাধারণ বিষয়ে লেখা লিখি করি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *