হার্নিয়া রোগ: একটি পর্যালোচনা
হার্নিয়া হলো একটি চিকিৎসাগত অবস্থা যেখানে কোনো অঙ্গ বা তার একটি অংশ শরীরের স্বাভাবিক অবস্থান থেকে স্থানচ্যুত হয়ে পেশির দুর্বল স্থানের মধ্য দিয়ে বাইরে চলে আসে। সাধারণত পেটের দেওয়ালের দুর্বল অংশ দিয়ে অন্ত্রের অংশ শরীরের বাইরে এসে উপস্থিত হয়। এটি বেশ সাধারণ একটি সমস্যা এবং বিভিন্ন কারণে হতে পারে।
হার্নিয়ার প্রকারভেদ
হার্নিয়ার বেশ কয়েকটি প্রকার রয়েছে, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে হতে পারে। সেগুলি হলো:
- ইনগুইনাল হার্নিয়া (Inguinal Hernia)
– সর্বাধিক সাধারণ হার্নিয়া যা পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। পেটের নিম্নাংশ থেকে স্থানচ্যুত হয়ে সৃষ্টি হয়।
- ফেমোরাল হার্নিয়া (Femoral Hernia)
– সাধারণত নারীদের মধ্যে দেখা যায় এবং উরুর কাছে স্থানচ্যুতির ফলে হয়।
- আম্বিলিকাল হার্নিয়া (Umbilical Hernia)
– শিশুদের মধ্যে সাধারণ, যেখানে নাভির কাছাকাছি হয়ে থাকে।
- হায়াতাল হার্নিয়া (Hiatal Hernia)
– পেটের উপরের অংশ খাদ্যনালির মধ্য দিয়ে বক্ষ গহ্বরে চলে যায়।
- ইনসিশনাল হার্নিয়া (Incisional Hernia)
– অপারেশন পরবর্তী ক্ষতস্থানে ঘটে।
লক্ষণসমূহ
হার্নিয়ার লক্ষণগুলি ব্যক্তির শরীরের স্থানের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
– আক্রান্ত স্থান ফুলে উঠা বা গুটির মতো কিছু উপস্থিত হওয়া
– ব্যথা বা অস্বস্তি
– ভারী কাজ বা হাঁচি-কাশির পর ব্যথার তীব্রতা বৃদ্ধি
– পেটের ফাঁপা ভাব বা ডায়রিয়া
কারণ
হার্নিয়ার প্রধান কয়েকটি কারণ হলো:
– শারীরিক পেশির দুর্বলতা
– বংশগত প্রভাব
– অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম বা ভারী ওজন তোলা
– দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা কোষ্ঠকাঠিন্য
– গর্ভধারণের সময় পেশির চাপে বৃদ্ধি
চিকিৎসা
হার্নিয়ার চিকিৎসার মধ্যে সাধারণত সার্জারি হলো প্রধান বিকল্প, বিশেষ করে যদি এটি জটিল আকার ধারণ করে। তবে, অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন হয় নাও হতে পারে যদি এটি ব্যথাহীন এবং জীবনের মান নষ্ট না করে। সার্জারির ধরণ হতে পারে ওপেন সার্জারি বা ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি।
হার্নিয়া রোগের ঝুঁকি কমাতে সচেতনতা এবং পেশির সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়, তবে তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।