সংস্কৃতি কি?

সংস্কৃতি (বা কৃষ্টি) হলো সেই জটিল সামগ্রিকতা যাতে অন্তর্গত আছে জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার এবং সমাজের একজন সদস্য হিসেবে মানুষের দ্বারা অর্জিত অন্য যেকোনো সম্ভাব্য সামর্থ্য বা অভ্যাস।

ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপিকা হেলেন স্পেনসার-ওটেইয়ের মতে, সংস্কৃতি হলো কিছু বুনিয়াদি অনুমান, মূল্যবোধ ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির, বিশ্বাস, নীতিমালা, প্রক্রিয়া এবং আচরণিক প্রথার অস্পষ্ট সমষ্টি–যা এক দল মানুষ ভাগ করে নেয় এবং সেই সমষ্টি দলের প্রত্যেক সদস্যের আচরণকে এবং তার নিকট অন্য সদস্যের আচরণের ‘অর্থ’ বা সংজ্ঞায়নকে প্রভাবিত করে (কিন্তু নির্ধারিত করে না)।

সংস্কৃতিকে মানুষের জীবনযাত্রার রূপ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। যেমন: কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের লোকেরা কীভাবে চিন্তা করে, কীভাবে তারা কাজ করে, তাদের আচার-আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি, পোশাক, তাদের কথা বা ভাষা, তাদের ধর্মীয় ক্রিয়াকালাপ, সংগীত, সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়গুলো মিলিত হয়ে একটি সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়।

আরো সহজভাবে সংস্কৃতির সংজ্ঞা হলো কোনও জাতি বা গোষ্ঠির চিন্তাভাবনা, আচরণগত দিকনিদর্শ, পোশাক, ভাষা, খাদ্য, ধর্ম,সংগীত, অঞ্চল বা ভূগোল ইত্যাদির সমষ্ঠি।

সংস্কৃতি শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধন। ইংরেজি Culture-এর প্রতিশব্দ হিসেবে সংস্কৃতি শব্দটি ১৯২২ সালে বাংলায় প্রথম ব্যবহার শুরু হয়।

সংস্কৃতি শব্দটা এসেছে মারাঠা থেকে। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বাংলায় কালচার অর্থে সংস্কৃতি শব্দটা প্রস্তাব করলে করলে রবীন্দ্রনাথ এর অনুমোদন দেন। এর আগে বাংলায় কৃষ্টি শব্দটি চালু ছিলো কালচার অর্থে। রবীন্দ্রনাথ কৃষ্টি শব্দটা মনে করতেন, কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত, সুতরাং কালচার অর্থে সংস্কৃতিই উপযুক্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *