বিজয় দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা / ভাষণ

১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস। এদিনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হওয়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিজয় দিবসের বক্তব্য pdf দেয়ার প্রয়োজন পরে। কেননা, প্রতিবছর এ দিনটি খুবই জাকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করা হয়।

দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করি। তাই এ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক। শুধু মঞ্চ ভাষণই নয়, এদিনের তাৎপর্য বোঝাতে পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদেরও বিজয় দিবসের ভাষণ লিখতে দেওয়া হয়।

আরো দেখুন বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ছবি, কবিতা, উক্তি ২০২২

১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের বক্তব্য

অতঃপর মা আমি ফিরে এলাম তোমার বুকে কিংবা এ মাটির বুকে,
বুঝে নাও রক্তের দামে কেনা তোমার এ
রক্তাক্ত বিজয়!”!

অদ্যকার বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত সভার মধ্যমণি সম্মানিত সভাপতি সাহেব, বিশিষ্ট
শিক্ষক পর্ষদ,আরও উপস্থিত শ্রদ্ধেয় অতিথিবৃন্দ এবং আমার প্রাণাধিক প্রিয় সহপাঠীবৃন্দ সকলকে আমার পক্ষ থেকে
বিজয়ের শুভেচ্ছা ও সালাম জানাচ্ছি।।

১৯৭১ সাল ডিসেম্বর মাস ১৬ তারিখ!

আমাদের বিজয় এই স্বাধীনতার বিজয়, যা বাঙালির ইতিহাস সর্বোপরি বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন।
৩০ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ বিজয়। মা বোনের সংরক্ষিত সম্ভ্রমের লুটপাটে এ বিজয়।আমরা সেই
সব আলোকিত মানুষকে স্মরন করছি যাদের আলোর পরশে এসেছে মুক্তমনে বাঁচার অধিকার । এরা সূর্যসন্তান এ
বাংলার।
প্রাণের মায়া ত্যাগে যারা দিলো এ বিজয় তাদের হাজারো সালাম। কত অন্তরায় কত বাধা পেরিয়ে এ বিজয় অর্জন।
হাজারও দেশদ্রোহী জঞ্জালে উত্তপ্ত ছিলো এ মাটি । দেশদ্রোহী সন্তানেরা আজ নিশ্চিহ্ন।
যারা প্রাণ দিলো তারাই ছিলো জয়ের সারথী।
মা মাটি চায়, চায় ওরা মায়ের স্বাধীনতা যেখানে থাকবেনা চলার পথে কোন অবৈধ নিয়ন্ত্রণ।

তাই কবি বলেছেন এভাবেই,

এ আমার মায়ের মাটি আমার ভাইয়ের রক্তের
প্রতিদানে ভাষার দেশ।
আমাকে নিষেধ করো না মা!
তোমার অস্তিত্ব তো আমাকেই রক্ষা করতে

হবে!


ভেবে না মা আমি ফিরবো বিজয় নিয়ে রক্তের
দামে।।

বিজয়ের সুখ পেলো বাঙালি। উজ্জিবিত বাঙলার আকাশ বাতাশ
বিজয়ের সুখ মিললো সর্বজনে।

বিজয়ের চার দশক পরে এ বাংলার মাটিতে বিজয়ের সেই সুখটা হারাতে বসেছে।বাঙালি আজ বিভক্ত স্বার্থের
মায়াজালে। নিজের সুখকে আকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা প্রাণপনে। অদূরদূ ভবিষ্যতে এ চিত্র বিরাজ করলে বাঙালি সামান্য
আঘাতে অস্তিত্ব হারাবে তা বলাই বাহুল্য। তাই সকল বাংলার মানুষের প্রতি আমার করোজোড়ে নিবেদন এই দেশটাকে
ভালোবেসে মা মাটির অস্তিত্ব রক্ষার্থে এ বিজয় দিবসের মহত্ত্ব নিয়ে আমরা আবার সেই বাঙালি হই যেখানে অজ্ঞ বিজ্ঞ
উঁচু নিচুর দৌরাত্ম্য নেই। তবেই পাবো আমরা সত্যিকারের বিজয় নতুবা এ বিজয় শুধুনামমাত্র।

সকলকে আবারও বিজয়ের শুভেচ্ছা বিদায় নিচ্ছি।

বিজয় দিবসের বক্তব্য pdf

প্রশ্ন: তোমার কলেজে ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থাপনের জন্য একটি ভাষণ প্রস্তুত কর।

মান্যবর প্রধান অতিথি এবং উপস্থিত সুধীবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। আজ ১৬ ডিসেম্বর, বাঙালি জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় দিন। ১৯৭১ সালে এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে যে মহান বিজয় দিবস অর্জিত হয়েছে তা চির আম্লান। যুগ যুগ ধরে তা আমাদের জীবনে প্রেরণা দান করতে থাকবে।

প্রিয় সুধীবৃন্দ
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সৃষ্টি হয়েছিল তার গৌরবজনক সমাপ্তি ঘটে সেই বছরেই ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে। আজ সেই মহান বিজয় দিবস। এ দেশের জাতীয় জীবনে এ দিবসটি সবচেয়ে গৌরবময় ও পবিত্রতম দিন। বিজয় দিবসের আনন্দোজ্জল এ মুহূর্তে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে তা হলো, এ দেশের অসংখ্য দেশপ্রেমিক শহিদের কথা।

১৯৭১ সালে এ দিনে বাংলার মানুষ পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক স্বৈরশাসনের ২৪ বছরের গ্লানি থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছিল। তাঁরা তাঁদের অমূল্য জীবন বিসর্জনের মাধ্যমে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন দেশ, আমরা এ স্বাধীন দেশর নাগারক। তাই জাতীয় অগ্রগতি ও চেতনার মূলে বিজয় দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম।

ভাইয়েরা আমার,
‘বিজয়’ শব্দটির সাথে যে স্বপ্ন একদা এদেশবাসী দেখেছিলেন আজও তা বাস্তবে রূপায়িত করা সম্ভব হয়নি। আপনারা লক্ষ করেছের, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, পরমত অসহিষ্ণুতা, রাজনৈতিক উগ্র উন্মাদনা, সামাজিক অবক্ষয়, সন্ত্রাস ও সংঘাতের সশস্ত্র বিক্ষোপ আমাদের জাতীয় জীবনে নতুন উপসর্গরূপে দেখা দিয়েছে।

এসব অপশক্তি দেশে এনেছে অশান্তি, বিশৃক্সক্ষলা, রক্তক্ষয়ী সংঘাত, নিরাপত্তাহীন, সন্ত্রাস। স্বভাবিকভাবে মনে প্রশ্ন জাগে, আমরা কি এ স্বাধীন দেশের জন্য স্বপ্ন দেখেছিলাম? এই কি আমাদের ইতিহাস ও সভ্যতার মূলমন্ত্র? এভাবে কি আমরা শক্তিধর মহান জাতির অস্তিত্বকে তুলে ধরতে পারব? এভাবে কী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা হবে?

স্বধীনতা অর্জনের প্রায় চার যুগ পর এখন অসংখ্য লোকঅশিক্ষা ও দারিদ্র্য কবলিত অবস্থায় রয়েছে। এক কথায় আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সঠিকভাবে অর্থবহ করে তুলতে পারিনি। আমরা বিজয় অর্জন করেছি। স্বাধীন দেশ পেয়েছি, কিন্তু তার তাৎপর্যের সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ঘটাতে পরেনি বলে এ দেশের জনগনের এখনও মুক্তি মেলেনি।

তাই আসুন, আমরা আমাদের সকল দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মধ্য দিয়ে দেশকে গড়ে তুলি। কেননা আমরা সমাজের কাছে আমরা প্রতিটি মানুষ দায়বদ্ধ। ঋণ পরিশোধের দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে- আমাদের অন্নহীনকে অন্ন এবং নিরক্ষরকে জ্ঞানের আলো দিয়ে এ স্বাধীনতা কে সার্থক করে তুলতে হবে। তাই সব রকম বিভেদ-বিচ্ছেদ ভুলে, হানাহানি সংঘাত দূর করে, সংকীর্ণ স্বার্থচিন্তা জলাঞ্জলি দিয়ে দেশ গড়ার কাজেব্রতী হই।

ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ হাফেজ।

FacebookX
Kamrul Islam
Kamrul Islam

সময় পেলেই মানেকীতে সাম্প্রতিক ও সাধারণ বিষয়ে লেখা লিখি করি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *