বাংলা ভাষার আদি নিদর্শনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন এবং উল্লেখযোগ্য হলো “চর্যাপদ”। চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম সারাক্ষণ হিসেবে স্বীকৃত। এটি বৌদ্ধ সাধকদের দ্বারা রচিত গীতিকবিতা বা পদাবলী যারা সংস্কার এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য এই ছোট ছোট কবিতাগুলো রচনা করেছিলেন।
চর্যাপদগুলোর সন্ধান পাওয়া যায় ১৯১৬ সালে, যখন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থাগারে এই পাণ্ডুলিপিটি আবিষ্কার করেন। এই পাণ্ডুলিপিতে মোট ৫০টি পদ ছিল, তবে বর্তমানে ৪৬টি পাওয়া যায়। এগুলোর ভাষা বাংলা, মৈথিলী এবং উড়িয়া ভাষার প্রাচীন মিশ্রণ যা “অফিশিয়াল প্রোটো-বাঙালি” বলে ধরা হয়।
চর্যাপদকে বাংলা ভাষা এবং সাহিত্যের বিকাশের ধারাবাহিকতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে মুখ্য হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। এগুলোর ভাষায় অনেক সমস্যাজনকতা ও আঞ্চলিক ভাষার প্রভাব দেখা যায় যা এই সময়ের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পরিবাহকদের প্রতিফলিত করে।
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতর নিদর্শন হিসাবে কেবল সাহিত্যিক নয়, বরং ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার প্রাথমিক বিকাশ ও বৈচিত্র্য উপলব্ধি করা যায়।