নামের প্রথমে Mst. এর বাংলা হলো “মোসাম্মাৎ” ও এর অর্থ হচ্ছে নাম (স্ত্রীলিঙ্গ)। এটি একটি সম্মানসূচক উপসর্গ, যা সাধারণত মুসলিম নারীদের নামের আগে ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে উপমহাদেশের প্রথায়।
মোছাম্মত / মোসাম্মৎ শব্দের আভিধানিক অর্থ— নামযুক্ত, নামীয়, অভিহিত, আখ্যায়িত, নির্ধারিত, নির্দিষ্ট। বাংলাদেশে মহিলাদের নামের পূর্বে মুসম্মৎ, মোসাম্মৎ, মুসম্মৎ ব্যবহার করা হয়।শব্দগুলো আরবি ‘মুসাম্মত’ থেকে উদ্ভূত। যার কাছাকাছি উচ্চারণ— মুসম্মৎ, মোসাম্মৎ, মোসম্মৎ। আরবি مُسَمَّى মুসাম্মা (পুংলিঙ্গ), مُسَمَّىاة মুসাম্মাহ (স্ত্রীলিঙ্গ) শব্দদ্বয়ের অর্থ “নাম রাখা হয়েছে এমন।” ইংরেজি ভাষায় যাকে বলা হয়— Named।
মুসলমান পুরুষদের নামের আগে “মোহাম্মাদ” এবং মহিলাদের নামের আগে “মুসাম্মাত” ব্যবহারের প্রথা নবী করীম (সাঃ), সাহাবা, তাবেয়ীন এবং তাবে-তাবেয়ীনের যুগে ছিল না। এটি মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের একটি প্রচলন, যা সম্ভবত ব্রিটিশ শাসনামলে হিন্দুদের “শ্রী” ব্যবহারের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে।
মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় এবং স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার জন্য “মোহাম্মাদ” এবং “মুসাম্মাত” ব্যবহার শুরু করেছিলেন। “মোহাম্মাদ” নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি অনুসরণের প্রতীক এবং “মুসাম্মাত” এর অর্থ “নাম রাখা হয়েছে”, যা নারীর মুসলিম পরিচয় নির্দেশ করে।
বুঝানোর জন্য উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে- হিন্দুদের শ্রী- এর বিপরীতে মুসলামানদের ‘জনাব’ এবং শ্রীযুক্ত ও শ্রীমান-এর বদলে মুসলমানদের ‘মুহাম্মাদ’ এবং শ্রীমতী-র বদলে ‘মোসাম্মাৎ’ ইসলামী স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় হিসাবে বলা যেতে পারে।
এটি মূলত একটি সাংস্কৃतिक এবং ঐতিহাসিক প্রথা, যার ধর্মীয় ভিত্তি নেই। তাই এটি ব্যবহার করা বা না করাতে কোনো বাধ্যবাধকতা বা নিষেধাজ্ঞা নেই।