সর্বশক্তিমান সংক্রান্ত আলোচনা
সর্বশক্তিমান বলতে এমন এক সত্তাকে বোঝানো হয় যার শক্তি ও ক্ষমতা সীমাবদ্ধ নয় এবং যিনি সর্বত্র বিরাজমান। বিভিন্ন ধর্ম ও দর্শনে সর্বশক্তিমানের ধারণার ভিন্নতা থাকলেও কিছু সাধারণ দিক রয়েছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি
- ইসলাম: ইসলাম ধর্মে “আল্লাহ” কে সর্বশক্তিমান হিসেবে মানা হয়। আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।
- হিন্দুধর্ম: হিন্দুধর্মে বিভিন্ন দেব-দেবীকে পূজা করা হয়, কিন্তু “ব্রহ্মা”, “বিষ্ণু” এবং “মহেশ্বর” (শিব) কে প্রধান তিনটি শক্তি হিসেবে ধরা হয়। এই তিনের সমষ্টিতে “ত্রিমূর্তি” ধারণা গঠিত হয়।
- খ্রিস্টান ধর্ম: খ্রিস্টান ধর্মে ঈশ্বর (গড) সর্বশক্তিমান, যিনি বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা। তিনি সবকিছু পরিচালনা করেন এবং যিশুখ্রিস্টের মাধ্যমে মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।
- বৌদ্ধধর্ম: যদিও বৌদ্ধধর্ম প্রধানত নাস্তিকবাদী, তথাপি মহাযান বৌদ্ধধর্মে “অমিতাভ বুদ্ধ” বা বিভিন্ন বোধিসত্ত্বের মাধ্যমে সর্বশক্তিমানের ধারণা তুলে ধরা গেছে।
দার্শনিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ
– দার্শনিক দৃষ্টিকোণ: অনেক দার্শনিক সর্বশক্তিমানকে এক সবকিছুর নিহিত কারণ হিসেবে বিবেচিত করেন। অ্যালান ওয়াটসের মতে, সর্বশক্তিমান কিনা তা মানুষের সীমিত বিবেচনার বাইরে।
– সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট: বিভিন্ন সংস্কৃতিতে সর্বশক্তিমানকে বিভিন্ন রূপে পুজা করা হয়। যেমন, গ্রিক পুরাণে জিউস এবং রোমান পুরাণে জুপিটার প্রধান দেবতা হিসেবে পূজিত।
উপসংহার
সর্বশক্তিমান ধারণা মানুষকে সৃষ্টির মহত্ত্ব ও রহস্যময়তাকে বোঝার প্রচেষ্টা করে। যদিও এই ধারণার প্রকাশ বিভিন্নভাবে হয়, সাধারণত, এটি একটি এমন শক্তি নির্দেশ করে যা সবাইকে আবদ্ধ করে রাখে এবং পরিচালনা করে।