টেকনোক্রেট (Technocrat) শব্দটি গ্রিক শব্দ “techne” (অর্থ: শিল্প, কৌশল) এবং “kratos” (অর্থ: শক্তি, ক্ষমতা) থেকে এসেছে। ইংরেজিতে শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯১৯ সালে।
টেকনোক্রেট বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝায় যিনি প্রযুক্তি বা বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞতা অর্জন করেছেন এবং সেই বিশেষজ্ঞতার ভিত্তিতে সরকার বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত। টেকনোক্রেটদের নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারকে টেকনোক্রেটিক সরকার বলা হয়।
টেকনোক্রেটদের ধারণাটি প্রথম প্রস্তাব করেন ফরাসি অর্থনীতিবিদ জর্জেস সাইমন (Georges-Henri Simon)। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, প্রযুক্তি বা বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞরা সরকার পরিচালনার জন্য সর্বোত্তম যোগ্য। কারণ, তারা নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে যুক্তি এবং প্রমাণের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
টেকনোক্রেটিক সরকারের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন, তারা প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তারা জনগণের চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তাগুলিকে ভালোভাবে বুঝতে পারেন। তারা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে সমস্যা সমাধান করতে পারেন।
তবে টেকনোক্রেটিক সরকারের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন, তারা জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারেন। তারা জনগণের চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তাগুলিকে উপেক্ষা করতে পারেন। তারা কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে পারেন।
বাংলাদেশে টেকনোক্রেটদের ধারণাটি বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশের অনেক মন্ত্রী এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা প্রযুক্তি বা বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ। তারা সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।