আল্লামা শব্দের অর্থ মহাজ্ঞানী এবং এর সঠিক উচ্চারণ হবে আলামা । সাধারণত ইসলামী আইন বা ফিকাহ,দর্শণ ও ইসলামী কুরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যাকারী জ্ঞানী গবেষককে এই উপাধী প্রদান করা হয়।
ফেসবুক থেকে নেওয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা
ফরহাঙ্গ-এ-রাব্বানী উর্দূ থেকে বের করা অর্থে যা জানলাম , আর এ নিয়ে যা ডকুমেন্ট দেখলাম তার প্রক্ষিতে আলোচনা করছি :
আল্লামা শব্দের মূল আরবী লিখনী হল علامح
যা ‘আইন’ শব্দ দ্বারা শুরু , মাখরাজের উচ্চারণে গলায় বিশেষ ভঙ্গিমা প্রয়োজন , এর সঠিক উচ্চারণ হবে ‘অলামা’ । অথবা ‘অল্লামাহ’ । কিন্তু কোনভাবেই ‘আলিফের’ বা ‘হামজার’ উচ্চারণ করা যাবেনা । ইংরেজিতে ALLAMA লিখা হয়ে থাকে , তবে আরাবিয়ান ও উর্দূভাষীরা এর উচ্চারণ ভাল বুঝেন । তাদের ভাষার বর্ণ যে আরবি বা পাশতু । আমরা বাঙালী যদি সরাসরি আল্লামা বলি তবে গুনাহ হবে । তারা দুইবার এল (L) লিখলেও উচ্চারণ এক ‘এল’ এর কে বলে ‘অলামা’ বা এখানে লা এর পর টান হবে । যা হোক । এটি লিখা বা উচ্চারণ সঠিক না জানলে তবে কাউকে না ডাকাই ভাল । কেননা, আল্লামা বলতে গিয়ে যদি কেউ ‘ আল্লা-মা’ বলে , তবে অর্থ দ্বারাবে ‘আল্লাহ নেই’ বা ‘ আল্লাহ না’ !! ….স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে টানাহেচড়া না করাটাই ভাল ।
এবার আসি علامح এর অর্থ কি । অলামা বা যাকে আল্লামা বলি এর অর্থ ‘সর্বজ্ঞ’ বা ‘মহাজ্ঞানী’ । কিন্তু বন্ধুরা চিন্তা করুণ , মানুষ কি মহাজ্ঞানী হতে পারে নাকি আল্লাহ !!! আল্লাহ ব্যতিত কাউকে মহাজ্ঞানী ভাবা শিরক । .. মহাক্ষমতাধর , মহাদাতা, মহাজ্ঞানী এসব কিছুই আল্লাহ । মানুষ জ্ঞানী হতে পারে মহাজ্ঞানী নয় ।
আল্লাহ নিজে নবীদের কলমের দ্বারা , ওহীর দ্বারা , জিব্রাঈল (আ এর দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন , কিন্তু কোন নবী নিজেদের শ্রেষ্টজ্ঞানী হিসেবে দাবি করার ধৃষ্টতা দেখায়নি । রসূল (সা নিজে বলেছেন আমি যদি জ্ঞানের শহর হই তবে আলী (রা) তার দরজা । এখানে সমস্থ জগতের মাঝে নিজেকে মাত্র শহরের সাথে আর আলীকে দরজার সাথে তুলনা করেছেন ।
কোরানের শিক্ষা দেখুন , খিজির ও মুসা আলাইহি সালাম এর ঘটনাঃ যখন মূসা আলাইহি সালামের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “এই পৃথিবীতে সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি কে?” তিনি উত্তর করেছিলেন, “আমি”…কিন্তু আল্লাহ তাঁর কাছে উন্মোচন করে দিলেন । জ্ঞানের গরিমা আল্লাহ পছন্দ করেনা। এটা আল্লাহর অনেক গুণের মাঝের একটা গুণ। আর আল্লাহ এটাও পছন্দ করেনা তার খাস বান্দাদের থেকেও কেউ অহংকার বা গরিমা করুক, যদি কেউ ভূল বশত করেই ফেলে, তবে আল্লাহ তা’য়ালা ঐ বান্দাকে যেকোন ভাবে পবিত্র করে নেন। …. কারণ নিজেকে জ্ঞানী হিসেবে জাহির করা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম , অনৈসলামীক , শিরকের অন্তর্ভুক্ত ।
এই علامح খিতাবটি এসেছে মুসলীমদের শিয়াগ্রুপ থেকে । যেমন, ইরান , ইরাকে ও পাকিস্তানে যে সকল শিয়ারা আছে তারা তাদের উলামা বা বড় কবি সাহিত্যিকদের এই علامح খিতাব প্রদান করত । আমরা সুন্নী হিসেবে শিয়াদের অনুসরণ করা ঠিক হবে কি ?? পাকিস্তানী অল্লামা ইকবালকে علامح খিতাব দেয়ার অনুসরণ করে আমাদের দেশে অনেকেরই নামের আগে এই টাইটেল লাগানো হয় যেমন দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে ‘আল্লামা’ খিতাব দিয়ে ডাকা হয় ‘আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী’ । আর্থাৎ মহাজ্ঞানী দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী । আসলে ‘আল্লামা ইকবাল’ পাকিস্তানীর মহাকবি , বা জাতীয় কবি ছিলেন একজন ‘আহমোদিয়া মুসলীম’ সম্প্রদায় ।
…. তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আহমেদিয়া মুসলীম ছিলেন । .. আমরা সুন্নী মুসলীম ‘শিয়া’ ও ‘আহমেদিয়া’ সম্প্রদায়কে মুসলীম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নারাজ হয়ে থাকি , তবে তাদের দেয়া বা অনুকরণের খিতাব علامح কি করে গ্রহণ করি ?? … যাদের মসজিদ ভাঙ্গার জন্য দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী এত করে ওয়াজ করেছেন তাদের অনুকরণ কি করে করেন , কেউ বলবেন কি ???
Comments (0)