বাংলা ভাষার উদ্ভব ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ইন্দো-আর্য শাখার একটি ভাষা। এটি মূলত প্রাকৃত ভাষা, বিশেষ করে মাগধী প্রাকৃত ও গৌড়ীয় অপভ্রংশ থেকে বিকাশ লাভ করেছে।
বাংলা ভাষার উৎপত্তির ক্রমধারা:
1️⃣ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা →
2️⃣ ইন্দো-আর্য ভাষা →
3️⃣ প্রাকৃত (মাগধী প্রাকৃত) →
4️⃣ গৌড়ীয় অপভ্রংশ →
5️⃣ বাংলা ভাষা
💡 ভাষাবিদ ড. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর গবেষণা অনুসারে, বাংলা ভাষার সরাসরি পূর্বসূরি হলো গৌড়ীয় অপভ্রংশ, যা প্রাকৃত ভাষার বিকৃত রূপ।
বাংলা ভাষার বিবর্তনের ধাপ:
📌 সংস্কৃত →
📌 মাগধী প্রাকৃত →
📌 গৌড়ীয় অপভ্রংশ →
📌 আদি বাংলা (১০০০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ) →
📌 মধ্য বাংলা (১৩০০-১৬০০ খ্রিস্টাব্দ) →
📌 আধুনিক বাংলা (১৬শ শতাব্দী – বর্তমান)
🔹 প্রাচীন বাংলা: চর্যাপদ এই যুগের ভাষার সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন।
🔹 মধ্য বাংলা: আরবি-ফারসি শব্দ সংযোজন ঘটে, ব্যাকরণগত পরিবর্তন হয়।
🔹 আধুনিক বাংলা: মাইকেল মধুসূদন দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রমুখ ভাষাকে গঠিত করেন। বাংলা সাহিত্যের নবজাগরণ ঘটে, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের মাধ্যমে বাংলা ভাষার মানকরণ শুরু হয়।
বাংলা ভাষার গুরুত্ব ও প্রসার:
✅ বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা ও বিশ্বের সপ্তম সর্বাধিক কথ্য ভাষা।
✅ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের কিছু অংশে অন্যতম প্রধান ভাষা।
✅ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতিসংঘে স্বীকৃত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে।
উপসংহার:
বাংলা ভাষার মূল শিকড় মাগধী প্রাকৃত ও গৌড়ীয় অপভ্রংশ ভাষায়, যা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার অংশ। এর দীর্ঘ বিবর্তনের ফলে আজকের বাংলা ভাষার আধুনিক রূপ তৈরি হয়েছে। 📖🌿
Comments (0)