Skip to content

বিদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি। কিন্তু অনেক ধরনের ভিসা থাকায় অনেকেই বিভ্রান্ত হন। এর মধ্যে মাল্টিপল ভিসা (Multiple Visa) বা মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা (Multiple Entry Visa) বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এই ব্লগ পোস্টে আমরা মাল্টিপল ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

মাল্টিপল ভিসা কি?

মাল্টিপল ভিসা এমন একটি ভিসা, যা আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একাধিকবার ওই দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়। সাধারণত, বেশিরভাগ ভিসা সিঙ্গেল এন্ট্রি (Single Entry) হয়, যার মানে আপনি একবার প্রবেশ করলে সেটি শেষ হয়ে যায়। কিন্তু মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা থাকলে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যতবার দরকার ততবার প্রবেশ করা যায়।

মাল্টিপল ভিসার প্রকারভেদ

মাল্টিপল ভিসা সাধারণত দুই ধরনের হতে পারে:
১. শর্ট-স্টে মাল্টিপল ভিসা: সাধারণত শেনজেন ভিসার ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেখানে ৯০ দিনের মধ্যে একাধিকবার প্রবেশ করা যায়।
২. লং-স্টে মাল্টিপল ভিসা: কিছু দেশ দীর্ঘমেয়াদি মাল্টিপল ভিসা ইস্যু করে, যা ১ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বৈধ থাকতে পারে।

মাল্টিপল ভিসা পেতে যা প্রয়োজন

১. ভিসার আবেদন ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করা।
২. পাসপোর্ট যার মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে।
৩. ভ্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কিত ডকুমেন্টস (যেমন: ব্যবসা, পর্যটন, শিক্ষা ইত্যাদি)।
৪. আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আয়ের উৎস ইত্যাদি)।
৫. ভিসা ফি পরিশোধ।

মাল্টিপল ভিসার বৈশিষ্ট্য

১. বহুবার প্রবেশের অনুমতি – মাল্টিপল ভিসা থাকার ফলে আপনি নির্দিষ্ট মেয়াদে বারবার দেশটিতে যেতে পারবেন।
২. নির্দিষ্ট মেয়াদে কার্যকর – সাধারণত ৬ মাস, ১ বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হয়।
3. নির্দিষ্ট সময় থাকতে পারবেন – প্রতিবার প্রবেশের পর কতদিন অবস্থান করতে পারবেন তা নির্ধারিত থাকে (যেমন, ৩০, ৬০ বা ৯০ দিন)।
৪. বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পাওয়া যায় – পর্যটন, ব্যবসা, শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের জন্য মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হতে পারে।


মাল্টিপল ভিসার সুবিধা

  • বারবার আবেদন করতে হয় না, যা সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে।
  • ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, কারণ তারা বারবার বিদেশে যাতায়াত করতে পারেন।
  • পরিবারের সদস্যদের দেখতে সহজ হয়, যারা ভিন্ন দেশে থাকেন।
  • ট্রানজিট বা ট্র্যাভেলের জন্য ভালো অপশন, যদি আপনাকে বিভিন্ন দেশে ঘুরতে হয়।

মাল্টিপল ভিসা কোন কোন দেশে পাওয়া যায়?

অনেক দেশই মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা প্রদান করে, যেমন:

  • যুক্তরাষ্ট্র (USA) – সাধারণত ১০ বছরের মাল্টিপল ভিসা পাওয়া যায়।
  • কানাডা – ৫-১০ বছরের মাল্টিপল ভিসা পাওয়া যায়।
  • শেঞ্জেন ভিসা (Schengen Visa, ইউরোপ) – ১, ৩ বা ৫ বছরের জন্য দেওয়া হয়।
  • দুবাই (UAE) – ৫ বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ট্যুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়।
  • থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর – ব্যবসা বা পর্যটনের জন্য মাল্টিপল ভিসা পাওয়া যায়।

মাল্টিপল ভিসার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন?

মাল্টিপল ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া নির্ভর করে নির্দিষ্ট দেশের উপর। তবে সাধারণত প্রয়োজন হয়:

  1. অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করা
  2. পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া
  3. ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও ফিনান্সিয়াল প্রমাণ দেওয়া
  4. ভ্রমণের কারণ সম্পর্কিত নথি প্রদান করা (যেমন, ব্যবসার কাগজ, আমন্ত্রণপত্র ইত্যাদি)
  5. ইন্টারভিউ দেওয়া (যদি প্রয়োজন হয়)

মাল্টিপল ভিসা নেওয়ার সময় কিছু সতর্কতা

✅ ভিসার মেয়াদ ও শর্ত সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
✅ অতিরিক্ত সময় অবস্থান করলে ভবিষ্যতে ভিসা পেতে সমস্যা হতে পারে।
✅ প্রতিবার দেশে প্রবেশের সময় ইমিগ্রেশন অফিসারের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।
✅ কিছু দেশে ভিসা থাকার পরও প্রবেশের অনুমতি ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার উপর নির্ভর করে।


উপসংহার

মাল্টিপল ভিসা বিশেষত ব্যবসায়ী, ঘন ঘন ভ্রমণকারী বা প্রবাসীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি একবার নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একাধিকবার ভ্রমণের সুযোগ দেয়। তবে আবেদন করার আগে শর্ত ও নিয়মাবলী সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার যদি মাল্টিপল ভিসা সংক্রান্ত আরও কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন! 😊✈️

FacebookX

সময় পেলেই মানেকীতে সাম্প্রতিক ও সাধারণ বিষয়ে লেখা লিখি করি

Comments (0)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top