ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনের কর্মসূচি কি ছিল?

ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক আন্দোলন। ১৯৬৯ সালে এই আন্দোলন পাকিস্তানের তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, এবং রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। ১১ দফা দাবি মূলত মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর উদ্যোগে গঠন করা হয়, এবং এতে প্রধানত ছাত্রলীগ ও অন্যান্য প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন যুক্ত ছিল। নিচে এই দাবি সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত বিষয় দেওয়া হলো:

  1. রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি:সকল প্রকার রাজনৈতিক বন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

  1. আধাসামরিক বাহিনীর বিলোপ:রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত আধাসামরিক বাহিনী বিলোপ করতে হবে।

  1. প্রতিরক্ষা বাজেট হ্রাস:প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কমিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।

  1. বৈদেশিক সাহায্যের সুষ্ঠু ব্যবহার:বৈদেশিক সাহায্যের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

  1. আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন:পূর্ব বাংলার জন্য স্বায়ত্তশাসন ও কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ কমাতে হবে।

  1. ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা:প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

  1. মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ:নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

  1. দুর্নীতি প্রতিরোধ:রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

  1. শিক্ষার সংস্কার:শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও মানোন্নয়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

  1. কৃষকদের অধিকার:কৃষকদের ন্যায্য অধিকার ও যথাযথ মজুরি নিশ্চিত করতে হবে।

  1. শিল্পকারখানার জাতীয়করণ:দেশীয় শিল্পকে রক্ষা এবং উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বেসরকারি শিল্পকারখানাগুলি জাতীয়করণ করতে হবে।

এই ১১ দফা দাবি বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক ছিল এবং তা তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সূচনা করেছিল। এটি দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে।

FacebookX
Najrin Akter
Najrin Akter

আমি নাজরিন আক্তার, সাধারণ ও অজানা বিষয়ে জানার অগ্রহী ! এখানে আমি এই গুলা নিয়ে নিয়মিত লেখা লেখি করতেছি ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *