ছয় দফা কর্মসূচি:
ছয়দফা কর্মসূচীর ভিত্তি ছিল ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব। পরবর্তীকালে এই ৬ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন জোরদার হয়। বাংলাদেশের জন্য এই আন্দোলন এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে একে ম্যাগনা কার্টা বা বাঙালি জাতির মুক্তির সনদও বলা হয়। প্রতি বছর ৭ই জুন বাংলাদেশে ‘৬ দফা দিবস’ পালন করা হয়।
ছয় দফার মূল বিষয়গুলি ছিল:
- সংসদীয় পদ্ধতির যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা: পাকিস্তান একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাষ্ট্র হবে যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা সীমিত থাকবে এবং বেশিরভাগ ক্ষমতা অঙ্গরাজ্যগুলোর হাতে থাকবে।
- অর্থনৈতিক স্বায়ত্তশাসন: প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের নিজস্ব কর ব্যবস্থা, মুদ্রা, এবং বাণিজ্য নীতি থাকবে।
- সরকারি চাকরিতে ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব: পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যার অনুপাতে সরকারি চাকরিতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।
- সামরিক বাহিনীতে ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব: পূর্ব পাকিস্তানের যুবকদের সামরিক বাহিনীতে যোগদানের সমান সুযোগ দেওয়া হবে।
- পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব মুদ্রা: পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব মুদ্রা থাকবে যা “টাকা” নামে পরিচিত হবে।
- পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব পুলিশ বাহিনী: পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব পুলিশ বাহিনী থাকবে।
ছয় দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই কর্মসূচি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে এবং তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। অবশেষে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে ছয় দফার অনেক দাবি পূরণ করা হয়েছিল।