নারী দশক একটি উদ্যোগ বা পরিকল্পনা যা নির্দিষ্ট সময়কালে নারীদের উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন এবং সমতার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য গৃহীত হয়। এর লক্ষ্যগুলো নির্ভর করে কোন দেশে বা প্রতিষ্ঠানে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে তার উপর। তবে সাধারণভাবে, নারী দশকের লক্ষ্যগুলো হলো:
১. নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা:
- নারীকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং সামাজিক ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের সুযোগ করে দেওয়া।
- নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করা এবং সমান অধিকার নিশ্চিত করা।
২. শিক্ষার প্রসার:
- নারীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা।
- প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো।
৩. অর্থনৈতিক স্বাধীনতা:
- নারীদের আয়ের উৎস সৃষ্টি করা এবং উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে সহায়তা করা।
- কর্মক্ষেত্রে সমান বেতন এবং কর্মসংস্থানে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।
৪. স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন:
- নারীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করা।
- মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি করা।
৫. নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ:
- নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি, এবং ঘরোয়া সহিংসতা প্রতিরোধে কঠোর আইন বাস্তবায়ন।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ পরিবেশ তৈরি।
৬. প্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি:
- ডিজিটাল শিক্ষা এবং প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
- প্রযুক্তি খাতে নারীদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য উৎসাহিত করা।
৭. লিঙ্গ সমতা:
- কর্মক্ষেত্রে এবং সমাজে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা।
- পরিবার, সমাজ, এবং রাষ্ট্রের সকল স্তরে সমান সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করা।
৮. নারীর নেতৃত্বের বিকাশ:
- রাজনীতি, প্রশাসন, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো।
- নারী নেতৃত্বকে উৎসাহিত করা।
বাংলাদেশে নারী দশকের লক্ষ্য:
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নে নির্দিষ্ট দশক বা সময়সীমার মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন এনজিও নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, এবং সমতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
উপসংহার: নারী দশকের মূল লক্ষ্য হলো নারীদের এমন এক পর্যায়ে উন্নীত করা, যেখানে তারা তাদের অধিকার, মর্যাদা এবং সুযোগ পেতে সক্ষম হবে, এবং সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।