জিএসপি অর্থাৎ Generalized System of Preferences। বাংলায় একে সাধারণত সাধারণ অগ্রাধিকার ব্যবস্থা বলা হয়। এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি বিশেষ ধরনের সুবিধা, যেখানে উন্নত দেশগুলো নিজেদের দেশে আমদানি করা পণ্যের উপর থেকে অনুন্নত এবং অল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য শুল্ক কমিয়ে দেয় বা সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করে দেয়।
কেন জিএসপি সুবিধা দেয়া হয়?
- অর্থনৈতিক উন্নয়ন: উন্নত দেশগুলো এই সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে অনুন্নত দেশগুলোর পণ্যের বাজারে প্রবেশ সহজ করে দেয়। এতে করে অনুন্নত দেশগুলোর রপ্তানি বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে।
- সম্পর্ক উন্নয়ন: এই সুবিধা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
- দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা: উন্নত দেশগুলো অনুন্নত দেশগুলোকে সহায়তা করার মাধ্যমে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মূল চেতনাকে বাস্তবায়ন করে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধা
বাংলাদেশ অনেক দেশ থেকে জিএসপি সুবিধা পেয়ে থাকে। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে, এই সুবিধা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়। যেমন, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ ইত্যাদি।
জিএসপি সুবিধার গুরুত্ব
- রপ্তানি বাড়িয়ে অর্থনীতিকে জোরদার করা: জিএসপি সুবিধার ফলে বাংলাদেশের পণ্য বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক দামে বিক্রি হতে পারে, যা রপ্তানি বাড়িয়ে অর্থনীতিকে জোরদার করে।
- চাকরির সৃষ্টি: রপ্তানি বাড়ার সাথে সাথে চাকরির সৃষ্টি হয় এবং দেশের বেকার সমস্যা কমে।
- বিদেশি মুদ্রা আয়: রপ্তানির ফলে বিদেশি মুদ্রা আয় বাড়ে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জিএসপি সুবিধা সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ
- শর্তাবলী মেনে চলা: জিএসপি সুবিধা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশকে কিছু শর্তাবলী মেনে চলতে হয়। এই শর্তাবলী মেনে চলা সবসময় সহজ হয় না।
- অন্যান্য দেশের সাথে প্রতিযোগিতা: জিএসপি সুবিধা পাওয়া অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতা করতে হয়।
- সুবিধা হারানোর ঝুঁকি: কোনো কারণে যদি বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা হারায় তাহলে রপ্তানি ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
উপসংহার
জিএসপি সুবিধা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সুবিধা সঠিকভাবে কাজে লাগালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতি আনা সম্ভব।